বিষয়বস্তুতে চলুন

বব ওয়াট

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
বব ওয়াট
ব্যক্তিগত তথ্য
পূর্ণ নাম
রবার্ট বব এলিয়ট স্টোরে ওয়াট
জন্ম(১৯০১-০৫-০২)২ মে ১৯০১
সারে, ইংল্যান্ড
মৃত্যু২০ এপ্রিল ১৯৯৫(1995-04-20) (বয়স ৯৩)
ত্রুরো, কর্নওয়াল, ইংল্যান্ড
ব্যাটিংয়ের ধরনডানহাতি
বোলিংয়ের ধরনডানহাতি মিডিয়াম
ভূমিকাব্যাটসম্যান, অধিনায়ক
আন্তর্জাতিক তথ্য
জাতীয় দল
টেস্ট অভিষেক
(ক্যাপ ২৩১)
২৪ ডিসেম্বর ১৯২৭ বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা
শেষ টেস্ট৩ মার্চ ১৯৩৭ বনাম অস্ট্রেলিয়া
ঘরোয়া দলের তথ্য
বছরদল
১৯২৩-১৯৩৯ওয়ারউইকশায়ার
১৯৪৬-১৯৫১ওরচেস্টারশায়ার
খেলোয়াড়ী জীবনের পরিসংখ্যান
প্রতিযোগিতা টেস্ট এফসি
ম্যাচ সংখ্যা ৪০ ৭৩৯
রানের সংখ্যা ১,৮৩৯ ৩৯,৪০৫
ব্যাটিং গড় ৩১.৭০ ৪০.০৪
১০০/৫০ ২/১২ ৮৫/২০৮
সর্বোচ্চ রান ১৪৯ ২৩২
বল করেছে ১,৩৯৫ ৬৫,৩৮২
উইকেট ১৮ ৯০১
বোলিং গড় ৩৫.৬৬ ৩২.৮৪
ইনিংসে ৫ উইকেট ৩১
ম্যাচে ১০ উইকেট
সেরা বোলিং ৩/৪ ৭/৪৩
ক্যাচ/স্ট্যাম্পিং ১৬/– ৪১৫/১
উৎস: ইএসপিএনক্রিকইনফো.কম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০১৭

রবার্ট বব এলিয়ট স্টোরে ওয়াট (ইংরেজি: Bob Wyatt; জন্ম: ২ মে, ১৯০১ - মৃত্যু: ২০ এপ্রিল, ১৯৯৫) সারের মিলফোর্ড হিদ হাউজ এলাকায় জন্মগ্রহণকারী বিখ্যাত ইংরেজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তারকা ও অধিনায়ক ছিলেন। ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। ১৯২৭ থেকে ১৯৩৭ সময়কালে ইংল্যান্ডের পক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অংশগ্রহণ করেছেন। ঘরোয়া প্রথম-শ্রেণীর ইংরেজ কাউন্টি ক্রিকেটে ওয়ারউইকশায়ারওরচেস্টারশায়ারের পক্ষে খেলেছেন। দলে তিনি মূলতঃ ব্যাটসম্যান ছিলেন। ডানহাতে ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি ডানহাতে মিডিয়াম বোলিং করতেন বব ওয়াট

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

১৯২৩ সালে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে অভিষেক হয় তার। ১৯২৬-২৭ মৌসুমে আর্থার জিলিগানের নেতৃত্বে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব ভারতে ২৬টি ও সিলনে চারটি প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নিয়েছিল। মরিস টেট, মরিস লেল্যান্ড, অ্যান্ডি স্যান্ডহাম, বব ওয়াট, আর্থার ডলফিন, জর্জ গিয়েরি, ইউয়ার্ট অ্যাস্টিলজর্জ ব্রাউনের ন্যায় খেলোয়াড়েরা দলের সদস্য ছিলেন।[]

টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ও পরে কাউন্টি ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যেতে থাকেন। ৫৬ বছর বয়সে ১৯৫৭ সালে সর্বশেষ প্রথম-শ্রেণীর খেলায় অংশ নেন বব ওয়াট। প্রথম-শ্রেণীর ৭৩৯ খেলায় অংশ নিয়ে ৪০.০৪ গড়ে ৩৯,৪০৫ রান তুলেন। ৩২.৮৪ গড়ে ৯০১ উইকেট লাভ করেন।

টেস্ট ক্রিকেট

[সম্পাদনা]

২৪ ডিসেম্বর, ১৯২৭ তারিখে জোহেন্সবার্গে স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তার টেস্ট অভিষেক হয়। ১৯৩০ সালে একচ্ছত্র প্রভাব বিস্তারকারী সফরকারী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজের চূড়ান্ত টেস্টে দলের অধিনায়কত্ব করার সুযোগ পান। তবে, ডগলাস জারদিনের নেতৃত্বে পরবর্তী কয়েক বছর এ দায়িত্ব থেকে তাকে দূরে রাখা হয়। ১৯৩০ সালে উইজডেন কর্তৃক বর্ষসেরা ক্রিকেটার মনোনীত হন তিনি।[]

সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে আঘাত তার নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল। তন্মধ্যে, ১৯৩৫ সালে ওয়েস্ট সফরে যান। জ্যামাইকায় অনুষ্ঠিত খেলার এক পর্যায়ে ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান বোলার ম্যানি মার্টিনডেলের বলে তার চোয়ালে আঘাত হানে। এরফলে মাঠে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন ও চার জায়গা ভেঙ্গে যায়। ড্রেসিং রুমে সেবা-শুশ্রুসার পর জ্ঞান ফিরে আসলে প্রথমেই তিনি পেন্সিল ও কাগজ নিয়ে সঙ্কেত লিখেন যাতে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তনের কথা উল্লেখ করা হয়।

১৯৩৭ সালে মেলবোর্নে স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ টেস্টে অংশ নেন। সমগ্র খেলোয়াড়ী জীবনে ইংল্যান্ডের পক্ষে ৪০ টেস্টে অংশ নিয়েছেন। ৩১.৭০ গড়ে ১,৮৩৯ রান ও ৩৫.৬৬ গড়ে ১৮ উইকেট দখল করেছেন তিনি।

অধিনায়কত্ব লাভ

[সম্পাদনা]

১৯৩২-৩৩ মৌসুমে জারদিনের সহকারী হিসেবে অস্ট্রেলিয়া সফরে যান। সফরের প্রস্তুতিমূলক খেলায় ওয়াট দল পরিচালনা করেন। তবে, জারদিন অধিনায়ক হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে বিতর্কিত বডিলাইন কৌশল অবলম্বন করে সমধিক ধিকৃত হন। রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে জারদিনকে পদত্যাগ করতে হয়। ফলশ্রুতিতে ওয়াটকে পুনরায় দলের দায়িত্বভার প্রদান করা হয়। এ দায়িত্বে অবস্থান করে দলকে আরও ১৫বার নেতৃত্ব দেন।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন, ১৯৩৪-৩৫

[সম্পাদনা]

১৯৩৪-৩৫ মৌসুমে ওয়াটের নেতৃত্বে হার্বার্ট সাটক্লিফহেডলি ভেরিটির ন্যায় ইংল্যান্ডের দুইজন সেরা খেলোয়াড় বাদেই এমসিসি দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করে। তাসত্ত্বেও শক্তিমত্তার দিক থেকে দলটি কোন অংশেই কম ছিল না। স্থানীয় এক সংবাদপত্রে এ দলটিকে সর্বাপেক্ষা সেরা দল হিসেবে এ উপকূলে আসার বিষয়ে উল্লেখ করে।[] দলটিতে ওয়ালি হ্যামন্ডমরিস লেল্যান্ডের ন্যায় ইংল্যান্ডের বর্তমান ক্রিকেট তারকাদের অংশগ্রহণ ছিল।[]

৮ জানুয়ারি, ১৯৩৫ তারিখে ব্রিজটাউনের কেনসিংটন ওভালে সিরিজের প্রথম টেস্টে বেশ কয়কবার বৃষ্টি আঘাত হানে। ব্যাটিং উপযোগী পিচে তিনদিনই খেলা অসম্ভব হয়ে পড়ে। নিম্নমূখী রানের খেলাটি কৌশলত্মাক ভঙ্গীমায় ইনিংস ঘোষণা করলে খেলা জমে উঠে। প্রত্যেক দলই তাদের স্বাভাবিক ব্যাটিং অবস্থান পাল্টায়। ইংল্যান্ড ঐ টেস্টে চার উইকেটে জয় তুলে নিতে সক্ষম হয়। মাত্র ৭৩ রানে জয়ের লক্ষ্যমাত্রায় খেলতে নেমে সফরকারী দলের সংগ্রহ একপর্যায়ে ৪৮/৬ হয়। তবে, ওয়ালি হ্যামন্ডের দৃঢ়তাপূর্ণ ব্যাটিংয়ে তারা রক্ষা পায়।[][] সিরিজের শেষ ও চূড়ান্ত টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল ইনিংস ও ১৬১ রানে বিজয়ী হয়। ফলশ্রুতিতে স্বাগতিক দল ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জয় পায়। এটিই তাদের প্রথম সিরিজ জয় ছিল।[]

ব্যক্তিগত জীবন

[সম্পাদনা]

৯৩ বছর বেঁচেছিলেন তিনি। মৃত্যু পূর্ব-পর্যন্ত তিনিই বয়োঃজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটারের মর্যাদা লাভ করেন। তার মৃত্যুর পর জ্যাক নিউম্যান এ সম্মাননায় ভূষিত হন। এজবাস্টনে ওয়ারউইকশায়ারের অনুশীলন মাঠের একট স্ট্যান্ড তার নামানুসরণে রাখা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি রয়্যাল এয়ার ফোর্সে কর্মরত ছিলেন। বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ ও ধারাভাষ্যকার উড্রো ওয়াট সম্পর্কে তার কাকাতো ভাই।[] ২০ এপ্রিল, ১৯৯৫ তারিখে কর্নওয়ালের ত্রুরো এলাকায় ত্রিলিস্কেতে ৯৩ বছর বয়সে তার দেহাবসান ঘটে।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "Marylebone Cricket Club cricket team in India and Ceylon in 1926–27"CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২৭ জুন ২০১৪ 
  2. "Wisden Cricketers of the Year" (ইংরেজি ভাষায়)। CricketArchive। সংগ্রহের তারিখ ২০০৯-০২-২১ 
  3. Whitaker 2015, পৃ. 121–22।
  4. Manley 1990, পৃ. 45।
  5. Sengupta 2016
  6. Manley 1990, পৃ. 423।
  7. Manley 1990, পৃ. 45–46, 424–25।
  8. Martin-Jenkins, Christopher (১৯৮০)। The Complete Who's Who of Test Cricketers (ইংরেজি ভাষায়) (1st সংস্করণ)। London: Orbis Publishing। পৃষ্ঠা 151আইএসবিএন 0-85613-283-7 

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]
ক্রীড়া অবস্থান
পূর্বসূরী
ডগলাস জারদিন
ইংরেজ ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৩৩-১৯৩৪/৩৫
উত্তরসূরী
গাবি অ্যালেন
পূর্বসূরী
ফ্রেডি ক্যালথর্প
ওয়ারউইকশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৩০-১৯৩৭
উত্তরসূরী
পিটার ক্র্যানার
পূর্বসূরী
অ্যালান হোয়াইট
ওরচেস্টারশায়ার ক্রিকেট অধিনায়ক
১৯৪৯-১৯৫১
উত্তরসূরী
রোনাল্ড বার্ড
পূর্বসূরী
বিল পন্সফোর্ড
বয়োঃজ্যেষ্ঠ জীবিত টেস্ট ক্রিকেটার
৬ এপ্রিল, ১৯৯১ - ২০ এপ্রিল, ১৯৯৫
উত্তরসূরী
জ্যাক নিউম্যান