বিষয়বস্তুতে চলুন

আর্নল্ড আরডিয়ান বাকে

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
আর্নল্ড আরডিয়ান বাকে
জন্ম
Arnold Ardiaan Bake

(১৮৯৯-০৫-১৯)১৯ মে ১৮৯৯
হিলভারসাম নেদারল্যান্ডস
মৃত্যু৮ অক্টোবর ১৯৬৩(1963-10-08) (বয়স ৬৪)
পেশাসঙ্গীতজ্ঞ ও অধ্যাপনা
কর্মজীবন১৯২৫-১৯৬৩
দাম্পত্য সঙ্গীকর্নেলিয়া টাইমার্স (বি.১৯২৫)

ড.আর্নল্ড আরডিয়ান বাকে (ইংরেজি: Arnold Ardiaan Bake) ( ১৯ মে ১৮৯৯- ৮ অক্টোবর ১৯৬৩)[১] [২] ছিলেন একজন ডাচ সঙ্গীতজ্ঞ যিনি এথনোমিউজিকোলজি নিয়ে গবেষণা করতে ১৯২০ ও ১৯৩০ এর বেশিরভাগ সময়ই সস্ত্রীক ভারত, নেপালশ্রীলঙ্কায় অতিবাহিত করেন।[৩] রবীন্দ্রনাথ মাঝে মধ্যে তাদের 'আরুণি' ও 'করুণা' বলে ডাকতেন। [৪] পরে তিনি 'লন্ডন স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ'-এ ভারতীয় সঙ্গীতের অধ্যাপক নিযুক্ত হন এবং আমৃত্যু সেখানে যুক্ত ছিলেন।[৩]

জীবনী[সম্পাদনা]

আর্নল্ড আরডিয়ান বাকে নেদারল্যান্ডসের হিলভারসাম শহরে এক বৃত্তিমান পটভূমির সচ্ছল পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন নেদারল্যান্ডসের এপে শহরের মেয়র। মেধাবী আরডিয়ান বাকে হিলভারসামের স্থানীয় ও পরে হারলেমের বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউট্রেখট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা লাভ করেন। আরডিয়ান বাকে ছিলেন দক্ষ সঙ্গীতশিল্পী ও গায়ক। ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের তিনি কর্নেলিয়া টাইমার্স-কে বিবাহ করেন। ওই বছরেই তিনি কার্ন ইন্স্টিটিউট থেকে বৃত্তি নিয়ে সঙ্গীতের উপর গবেষণা করার জন্য সস্ত্রীক ভারতে আসেন। দীর্ঘ ছাব্বিশ বৎসর অবস্থানকালের প্রথম চার বৎসর কাটান শান্তিনিকেতনের সঙ্গীতভবনে।[৩] তিনি সংস্কৃত সহ জাভানিজ, মালয়, আরবি ভাষা শিক্ষালাভ করেন। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে কবির বালি ও যবদ্বীপ ভ্রমণের সঙ্গী হয়েছিলেন। কেন্দুলি'র লোকসঙ্গীত এবং নবদ্বীপ ব্রজবাসীদের কীর্তন গানের সম্পর্কে বিশদ পাঠ নেন এবং ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে কলকাতায় রেকর্ড করান লোকসঙ্গীতের। বাকে নিজে রবীন্দ্রনাথের ছাব্বিশটি গানের অবাধ প্রতিলিপি করেন এবং ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সে ফিলিপ স্টার্ন ও তার ভূমিকাসহ 'Twentysix Songs of Rabindranath Tagore' বিলেতি স্বরলিপি-সহ একটি প্রামাণ্য বই প্রকাশিত হয়। বইটির ভূমিকায় আরডিয়ান বাকে লেখেন, কবির গ্রাম ছাড়া ওই রাঙামাটির পথ গানটি মাঝিমল্লারদের গানের তথা ভাটিয়ালি গানের সুরে উদ্ভুত। তিনি ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে শান্তিনিকেতনে ভাটিয়ালি গানের সুরে বীরেশ্বর চক্রবর্তীর কণ্ঠে রেকর্ডও করেন এবং আরও উল্লেখ করেন এই বলে যে, কবি তার কাজে সম্মতি দিয়েছেন। এছাড়াও তিনি সঙ্গীতের উপর অনেক বই লিখেছেন। রবীন্দ্রনাথ ও তার কাজের ওপর ডাচ ভাষায় কয়েকটি বইও আছে। রবীন্দ্রনাথ আর্নল্ড আরডিয়ান বাকে ও তার স্ত্রীকে আরুণি' ও 'করুণা' বলে সম্বোধন করতেন। ভারতীয় উপমহাদেশের শাস্ত্রীয়, লোকসঙ্গীত ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে গবেষণার জন্য নেপাল, শ্রীলঙ্কাসহ ও ভারতের নানা স্থান পরিভ্রমণ করেন। ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ থেকে আমৃত্যু লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের'লন্ডন স্কুল অফ ওরিয়েন্টাল অ্যান্ড আফ্রিকান স্টাডিজ'-এ ভারতীয় সঙ্গীতের অধ্যাপক ছিলেন।[৪] এখানে তার ছাত্র ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলসের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়ার লোকসঙ্গীত ও শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অধ্যাপক নজীর আলি জৈরাজভাই।[৩]

জীবনাবসান[সম্পাদনা]

শারীরিক অসুস্থতার কারণে ড. আর্নল্ড আরডিয়ান বাকে কিছুদিন লন্ডন হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ৮ অক্টোবর মঙ্গলবার বাকে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। [২]


তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]

  1. "Papers of Dr Arnold Adrian Bake"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০১ 
  2. "Obituary Dr Arnold Adriaan Bake 1899-1963:Folklore:Vol.74"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০১ 
  3. "Arnold Bake's 1932-33 films and audio recordings from Bengal"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০১ 
  4. "গীতবিতান- চরিতাভিধান-আর্নল্ড এড্রিয়ান বাকে"। সংগ্রহের তারিখ ২০২৪-০৭-০১