শিনোবু ইশিহারা
শিনোবু ইশিহারা | |
---|---|
![]() | |
জন্ম | |
মৃত্যু | ৩ জানুয়ারি ১৯৬৩ | (বয়স ৮৩)
জাতীয়তা | জাপান |
পরিচিতির কারণ | ইশিহারা বর্ণ পরীক্ষা |
বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন | |
কর্মক্ষেত্র | চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান |
শিনোবু ইশিহারা (石原 忍, ইশিহারা শিনোবু, টোকিও, ২৫ সেপ্টেম্বর ১৮৭৯ – ইজু উপদ্বীপ, ৩ জানুয়ারি ১৯৬৩) হলেন একজন জাপানি চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞানী, যিনি বর্ণান্ধতা নির্ণয়ের জন্য ইশিহারা বর্ণ পরীক্ষা পদ্ধতির আবিষ্কার করেন। তিনি জাপানি সামরিক বাহিনীর একজন চিকিৎসক ও জেনারেল ছিলেন।
প্রারম্ভিক জীবন ও কর্মজীবন[সম্পাদনা]
ইশিহারা ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে সামরিক বৃত্তিসহ চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্নাতক সম্পন্ন করেন।[১] এর পরপরই তিনি জাপানি রাজকীয় সেনাবাহিনীতে চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন। তিনি মূলত একজন শল্যচিকিৎসক দায়িত্বরত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠেন। ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে গবেষণার্থে নিজেকে নিয়োজিত করেন। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আর্মি মেডিক্যাল কলেজের প্রদর্শক নিয়োজিত হন। সেখানে রোগী দেখার পাশাপাশি "সামরিক চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান" এবং ঊর্ধ্বতন সৈন্যদের নির্বাচন বিষয়ে গবেষণাকার্য পরিচালনা করেন। মিলিটারি মেডিক্যাল কলেজে কাজ করার সময় তাকে সামরিক বাহিনীর নবাগত সৈন্য বাছাই প্রক্রিয়ায় বর্ণান্ধতা নির্ণয়ে একটি পরীক্ষা পদ্ধতি আবিষ্কার করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে তার সহকারী, যিনি একজন বর্ণান্ধ ছিলেন, ইশিহারাকে তার গবেষণায় ও বর্ণান্ধতা নির্ণায়ক পাতগুলোকে পরীক্ষায় সহায়তা করেন। বর্ণান্ধতা পরীক্ষার প্রথম পাতগুলো জল রঙে হিরাগানা লিপিতে হাতে আঁকা ছিল।
ইশিহারা বর্ণদৃষ্টি পরীক্ষা[সম্পাদনা]
![](http://178.128.105.246/cars-http-upload.wikimedia.org/wikipedia/commons/thumb/e/ef/Eight_Ishihara_charts_for_testing_colour_blindness%2C_Europe_Wellcome_L0059158.jpg/220px-Eight_Ishihara_charts_for_testing_colour_blindness%2C_Europe_Wellcome_L0059158.jpg)
১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দে ইশিহারার নকশাকৃত বর্ণান্ধতা নির্ণায়ক পরীক্ষার জন্য তিনি খ্যাতি লাভ করেন। পরীক্ষায় একজন ব্যক্তিকে কিছু রঙিন পাত দেখানো হয় এবং তাতে বিদ্যমান সংখ্যাগুলো বলতে বলা হয়। ��িভিন্ন রকম বর্ণান্ধতার রোগীরা এই পাতগুলো থেকে বিভিন্ন রকম উত্তর দেন, যা থেকে ঐ ব্যক্তির বর্ণান্ধতা নিরূপণ করা যায়। ইশিহারা জাপানিদের দৃষ্টির যথার্থতা সংক্রান্ত একটি চার্ট তৈরি করেন এবং চোখের নিকট বিন্দু নির্ণয়ের জন্য একটি যন্ত্রের নকশা করেন। ইশিহারার নকশাকৃত উভয় প্রযুক্তিই বর্তমানে জাপানে ব্যবহৃত হয়। এছাড়া তিনি ট্রাকোমা ও মায়োপিয়া নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন।
১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে ইশিহারা রাজকীয় টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ে চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেণিতে ভর্তি হন। এ সময়ে তিনি জুজিরো কোমোতোর অধীনে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীতে তিনি জার্মানিতে উলফগ্যাং স্টক, থিওডোর অ্যাক্সেনফেল্ড এবং কার্ল ভন হ্যাস প্রমুখের অধীনে পড়াশোনা করেন। ১৯২২ খ্রিষ্টাব্দে ইশিহারা রাজকীয় টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষুচিকিৎসাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও চেয়ারম্যান হিসেবে কোমোতোর স্থলাভিষিক্ত হন এবং ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ পর্যন্ত সে পদে বহাল থাকেন।
ব্যক্তিগত জীবন[সম্পাদনা]
ব্যক্তিগত জীবনে ইশিহারা খুবই সাধারণ থাকতে পছন্দ করতেন এবং বস্তুবিলাসিতায় তার আগ্রহ ছিল না। তিনি তার ছাত্রদের নিকট শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন, যারা তার অবসরের পর তার জন্য ইজু উপদ্বীপের একটি উষ্ণ প্রস্রবণের নিকট একটি কটেজ নির্মাণ করে দেয়। সেখানে তিনি বিনা সম্মানীতে প্রতিবেশীদের চিকিৎসা করতেন এবং একটি ক্লিনিক পরিচালনা করতেন। তৎকালের জাপানি রীতি অনুসারে রোগীরা চিকিৎসার পর গৃহজাত সামগ্রী এবং কিছু কিছু টাকা শ্রদ্ধাবোধ থেকে দিয়ে যেত। ইশিহারা তার নিজস্ব কিছু খরচ নির্বাহের পর অবশিষ্ট অর্থ গ্রামবাসীদের ফেরত দেন। এই খরচের মধ্যে তিনি গ্রামে একটি গ্রন্থাগার, শিশুদের জন্য একটি পাঠাগার নির্মাণ করেন, যার সুবিধাভোগীদের থেকে ইশিহারা ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত শ্রদ্ধা পেতেন।[২]
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "Shinobu Ishihara"। Whonamedit? ; A dictionary of medical eponyms। সংগ্রহের তারিখ ৩ ডিসেম্বর ২০১৩।
- ↑ Japanese Journal of Ophthalmology, volume 38, issue 1. 1994