অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত | |
---|---|
জন্ম | অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত ১৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ নোয়াখালী, বাংলাদেশ |
মৃত্যু | ২৯ জানুয়ারি ১৯৭৬ কলকাতা, ভারত | (বয়স ৭২)
ছদ্মনাম | নীহারিকা দেবী |
পেশা | কবি, ঔপন্যাসিক ও সম্পাদক |
ভাষা | বাংলা |
শিক্ষা | ইংরেজি সাহিত্য |
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান | কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় |
সময়কাল | কল্লোল যুগ |
ধরন | রোমান্টিক, গণচেতনা |
উল্লেখযোগ্য রচনাবলি | বেদে, কাকজোৎস্না, অমাবস্যা, পূর্ব-পশ্চিম, উত্তরায়ণ |
সক্রিয় বছর | ১৯২১ - ১৯৭৪ |
আত্মীয় | জিতেন্দ্রকুমার সেনগুপ্ত (ভাই) |
অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত (ইংরেজি: Achintya Kumar Sengupta, ১৯শে সেপ্টেম্বর, ১৯০৩ - ২৯শে জানুয়ারি, ১৯৭৬) বিশিষ্ট বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক ও সম্পাদক ছিলেন। রবীন্দ্রনাথ ও শরৎচন্দ্রের পরে সাহিত্যজগতে আলোড়ন সৃষ্টিকারী কল্লোল যুগের লেখকদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
প্রাথমিক জীবন[সম্পাদনা]
পিতার কর্মস্থল নোয়াখালী শহরে তার জন্ম হয়। তবে তার পরিবারের আদি নিবাস ছিল বর্তমান মাদারীপুর জেলায়। তার বাবা রাজকুমার সেনগুপ্ত নোয়াখালী আদালতের আইনজীবী ছিলেন। অচিন্ত্যকুমারের শৈশব, বাল্যজীবন, ও প্রাথমিক শিক্ষা নোয়াখালীতেই সম্পন্ন হয়। ১৯১৬ সালে বাবার মৃত্যুর পর তিনি কলকাতায় অগ্রজ জিতেন্দ্রকুমার সেনগুপ্তের নিকট চলে যান এবং সাউথ সাবার্বান স্কুল থেকে ম্যাট্রিক (১৯২০), সাউথ সাবার্বান কলেজ (বর্তমান আশুতোষ কলেজ) থেকে আই. এ. (১৯২২), এবং ইংরেজি সাহিত্যে অনার্সসহ বি. এ. (১৯২৪) পাস করেন। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে এম. এ (১৯২৬) ও পরবর্তীকালে বি. এল ডিগ্রী (১৯২৯) লাভ করেন।[১]
কর্মজীবন[সম্পাদনা]
অচিন্ত্যকুমার ১৯২৫ সালে কল্লোল পত্রিকা প্রকাশনার দায়িত্ব নেন। তিনি বিচিত্রায়ও কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৩১ সালে তিনি অস্থায়ী মুন্সেফ হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন এবং ক্রমে সাব-জজ, জেলা জজ ও ল' কমিশনের স্পেশাল অফিসার পদে উন্নীত হয়ে ১৯৬০ সালে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
সাহিত্যকর্ম[সম্পাদনা]
১৯২১ সালে প্রবাসী পত্রিকায় নীহারিকা দেবী ছদ্মনামে অচিন্ত্যকুমারের প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। তিনি উপন্যাস ও ছোটগল্প রচনায় বিশেষ কৃতিত্ব দেখান। তিনি উপন্যাসের আঙ্গিকে আবেগপূর্ণ ভাষায় ধর্মগুরুদের জীবনীও (যেমন- পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণ, চার খণ্ডে (১৯৫২-১৯৫৭)) লিখেছেন। তার প্রথম উপন্যাস বেদে (১৯২৮); এটি আঙ্গিক, রচনাভঙ্গি ও বিষয়বিন্যাসে আধুনিক বাংলা সাহিত্যের একটি বিশিষ্ট উপন্যাস। তার লেখায় আধুনিকতা অতি প্রবলভাবে ফুটে উঠেছে। " বেদে" উপন্যাসের জন্য তিনি রবীন্দ্রনাথের অভিনন্দনপত্র পান। কাকজ্যোৎস্না " প্রথম কদমফুল তার অন্য দুইটি বিখ্যাত উপন্যাস। ছোটগল্পশিল্পী হিসেবেও তিনি খ্যাত। বিচারবিভাগে চাকরির বদৌলতে তিনি বাংলাদেশের নানা স্থানে ঘুরে বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সংস্পর্শে আসেন; এইসব অন্তরঙ্গ পরিচিতজনদের জীবনের নানা কাহিনী অচিন্ত্যকুমার তার ছোটো গল্পগুলিতে নিপুণভাবে এঁকেছেন। টুটাফাটা (১৯২৮) তার প্রথম ছোটো গল্পের বই। তার স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ কল্লোল যুগ (১৯৫০) পাঠক-মহলে বেশ সাড়া জাগায়।
অচিন্ত্যকুমারের গ্রন্থসংখ্যা সত্তরের মত। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যগুলির একটি তালিকা নিচে দেওয়া হল।
উপন্যাস[সম্পাদনা]
- বেদে (১৯২৮)
- কাকজোৎস্না (১৯৩১)
- বিবাহের চেয়ে বড় (১৯৩১)
- প্রাচীর ও প্রান্তর (১৯৩২)
- প্রথম কদমফুল (১৯৬১)
জীবনীগ্রন্থ[সম্পাদনা]
- পরমপুরুষ শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ (চার খন্ড ১৯৫২-১৯৫৭)
- বীরেশ্বর বিবেকানন্দ (তিন খণ্ড, ১৯৫৮-৬৯)
- উদ্যত খড়্গ ( অখণ্ড সংস্করণ, মিত্র ও ঘোষ, কলকাতা)
- পরমাপ্রকৃতি শ্রী শ্রী সারদামণি
- অখণ্ড অমিয় শ্রী গৌরাঙ্গ
স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থ[সম্পাদনা]
- কল্লোলযুগ (১৯৫০)
- জৈষ্ঠের ঝড়
গল্পগ্রন্থ[সম্পাদনা]
- টুটা-ফুটা (১৯২৮)
- অকাল বসন্ত (১৯৩২)
- অধিবাস (১৯৩২)
- যতনবিবি (১৯৪৪)
- কাঠ খড় কেরোসিন (১৯৪৫)
- চাষাভুষা (১৯৪৭)
- সারেঙ (১৯৪৭)
- হাড়ি মুচি ডোম (১৯৪৮)
- একরাত্রি (১৯৬১)
কাব্যগ্রন্থ[সম্পাদনা]
- অমাবস্যা (১৯৩০)
- আমরা (১৯৩৩)
- প্রিয়া ও পৃথিবী (১৯৩৬)
- নীল আকাশ (১৯৪৯)
- আজন্মসুরভী (১৯৫১-৫২)
- পূর্ব-পশ্চিম (১৯৬৯)
- উত্তরায়ণ (১৯৭৪)
নাটক[সম্পাদনা]
- একাঙ্ক নাট্য-সংকলন (১৯৪৫)
পুরস্কার[সম্পাদনা]
সাহিত্য ও সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য তিনি ১৯৭৫ সালে জগৎ্তারিণী পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার ও শরৎচন্দ্রস্মৃতি পুরস্কার লাভ করেন।[২]
মৃত্যু[সম্পাদনা]
১৯৭৬ সালের ২৯ জানুয়ারি কলকাতায় তার মৃত্যু হয়।
তথ্যসূত্র[সম্পাদনা]
- ↑ "অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত"। মানবকণ্ঠ। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৫। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৬।[স্থায়ীভাবে অকার্যকর সংযোগ]
- ↑ "অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত"। অনুশীলন। ২৯ মে ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ১২ জানুয়ারি ২০১৬।
বহিঃসংযোগ[সম্পাদনা]
- বাংলাপিডিয়া
- বাংলা বিশ্বকোষ। প্রথম খণ্ড। নওরোজ কিতাবিস্তান। ডিসেম্বর, ১৯৭২।
- বাঙালি চরিতাভিধান। প্রথম খণ্ড। সাহিত্য সংসদ। জানুয়ারি ২০০২।
- সংসদ বাংলা সাহিত্যসঙ্গী, ডঃ শিশিরকুমার দাস, ২০০৩।
- ১৯০৩-এ জন্ম
- ১৯৭৬-এ মৃত্যু
- বাঙালি সাহিত্যিক
- বাঙালি কবি
- ভারতীয় বিচারপতি
- রবীন্দ্র পুরস্কার বিজয়ী
- বাঙালি বিচারপতি
- ২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী কবি
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় কবি
- ২০শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক
- বাঙালি হিন্দু
- বাঙালি লেখক
- বাঙালি ঔপন্যাসিক
- ২০শ শতাব্দীর বাঙালি
- বাংলা ভাষার লেখক
- ভারতীয় পুরুষ লেখক
- ভারতীয় কবি
- ভারতীয় সম্পাদক
- ভারতীয় জীবনীকার
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় জীবনীকার
- ভারতীয় ছোটগল্পকার
- ভারতীয় পুরুষ ছোটগল্পকার
- ভারতীয় ঔপন্যাসিক
- ভারতীয় পুরুষ ঔপন্যাসিক
- ভারতীয় পুরুষ কবি
- বাঙালি পুরুষ কবি
- বাংলা ভাষার কবি
- কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় লেখক
- ২০শ শতাব্দীর ভারতীয় ঔপন্যাসিক
- ২০শ শতাব্দীর বাঙালি কবি
- কলকাতার লেখক
- নোয়াখালী জেলার ব্যক্তি