বিষয়বস্তুতে চলুন

ভীম

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
ভীম
রবি বর্মা প্রেস থেকে প্রকাশিত ভীমের তৈলচিত্র
অন্তর্ভুক্তিপাণ্ডব, মহাভারত রাজ
অস্ত্রগদা, তীর-ধনুক
পরিবারপিতামাতা
ভাই
সৎভাই
দাম্পত্য সঙ্গী
  • হিড়িম্বা(হিডিম্বাসুরের বোন)
  • নাগশ্রী(জনৈকা নাগকন্যা)
  • দ্রৌপদী
  • কলি(জরাসন্ধের কাকা মনিবাহনের কন্যা)
  • সুপ্রভা(শিশুপালের বোন)
  • বলন্ধরা(কাশিরাজ দেবেশের কন্যা)
  • পৌরনামি(ঋষিকন্যা)
সন্তান
  • ঘটোৎকচ(হিড়িম্বার থেকে)
  • বিলালসেন(নাগশ্রীর থেকে)
  • সূতসোম ও সংযুক্তা(দ্রৌপদী থেকে)
  • সর্বত্রাতা, সর্বগত ও তরস্বিনী(করি থেকে)
  • শ্রুত ও বসুমিত্র(সুপ্রভা থেকে)
  • সর্বগ ও সর্বাঙ্গ(বলন্ধরা থেকে)
  • সর্বতুঙ্গ(পৌরনামী থেকে)
আত্মীয়

হিন্দু মহাকাব্য মহাভারতে বর্ণিত ভীম (সংস্কৃত: भीम হলেন পঞ্চপাণ্ডবদের মধ্যে দ্বিতীয় পাণ্ডব। মহাভারতে ভীমের শৌর্য-বীর্যের অনেক ঘটনা বর্ণিত হয়েছে। পবনদেবের বরে ভীমের জন্ম হয়। পাণ্ডু এবং মাদ্রীর মৃত্যুর পর দেবী কুন্তী এবং ভীমসহ তাঁর অন্য ৪ পুত্র সহ হস্তিনাপুরে ছিলেন। শৈশব থেকে ভীম এর সাথে তার জ্যেঠতুতো ভাই কৌরবদের, বিশেষ করে দুর্যোধনের সাথে খুব শত্রুতা ছিল। দুর্যোধন এবং তার মামা শকুনি মিলে ভীমকে অনেক বার মেরে ফেলতে চেষ্টা করে। একবার তারা ভীমকে বিষ মিশ্রিত খাদ্য খাইয়ে দেয়। এতে ভীম অজ্ঞান হয়ে গেলে, তারা ভীমকে নদীতে ফেলে দেয়। নাগরা, ভীমকে উদ্ধার করে এবং তাকে বিশেষ পানীয় পান করতে দেয়। তা পান করে ভীম আরো বলশালী এবং তার দেহে বিষ প্রতিরোধী শক্তি জন্মে। লাক্ষাগৃহের অগ্নিকাণ্ড থেকে বাঁচার পর পাণ্ডবগণ ও তাদের মাতা কুন্তী সিদ্ধান্ত নিলেন হস্তিনাপুরে না গিয়ে আত্মগোপনে থাকবেন। এইসময়ে ভীম অনেক রাক্ষসকে হত্যা করেন যেমন: বকাসুর এবং হিড়িম্ব

৫ ভাই মিলে ইন্দ্রপ্রস্থ নগরী স্থাপন করলে, অর্জুন এবং শ্রীকৃষ্ণের সাথে ভীম মগধ রাজ্যের অত্যাচারী রাজা জরাসন্ধকে মল্লযুদ্ধে পরাজিত এবং হত্যা করেন। পরবর্তীতে, রাজসূয় যজ্ঞের সময় ভীম পূর্বদিকের দেশ জয়ে অভিযানে যান এবং কর সংগ্রহ করেন।

পরবর্তীতে, দুর্যোধন, যুধিষ্ঠিরকে পাশা খেলায় আহ্বান করে। দুর্যোধন এবং মামা শকুনির হঠকারিতায় যুধিষ্ঠির পাশা খেলায় পরাজিত হন। পাণ্ডবগণ এবং তাঁদের স্ত্রী দ্রৌপদীকে ১২ বছরের বনবাস এবং ১ বছরের অজ্ঞাতবাস সহ মোট ১৩ বছরের বনবাসে পাঠানো হয়। বনবাসকালে, ভীম তাঁর অগ্রজ ভ্রাতা হনুমানের সাথে পরিচিত হন। অজ্ঞাতবাসের জন্য পাণ্ডবগণ মৎস্য রাজ্য থাকার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেসময়, ভীম, ছদ্মনাম বল্লভ নামে মৎস্যদেশের রাজার রান্নাঘরে পাচকের কাজ করেন। সেখানে, মৎস্যদেশের সেনাপতি কীচক, সৈরিন্ধ্রী তথা দ্রৌপদীকে অপমান করলে ভীম, কীচককে বধ করেন। কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে ভীম একাই ১০০ জন কৌরব ভাইকে হত্যা করেন। কথিত হয়, তাঁর শরীরে প্রায় ১০০০০(দশ হাজার) হাতির বল রয়েছে।

জন্ম ও শৈশব জীবন

[সম্পাদনা]

ভীমের পিতা পাণ্ডু একদা শিকারে গিয়ে হরিণ মারতে গিয়ে ভুল বশত মিলনরত এক সাধুকে মেরে ফেলেন। মৃত্যুর আগে সাধু তাকে অভিশাপ দেন যে যদি তিনি স্ত্রী সহবাস করেন তাহলে তার মৃত্যু ঘটবে। এই অভিশাপের কারণে পাণ্ডু সন্তানের পিতা হতে অক্ষম ছিলেন। হত্যাকান্ডের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে পাণ্ডু হস্তিনাপুরের সিংহাসন ত্যাগ করেন এবং তার অন্ধ ভাই, ধৃতরাষ্ট্র, রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।[] পাণ্ডুর অক্ষমতার পরও পাণ্ডবরা একটি অসাধারণ উপায়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার স্ত্রী, রাণী কুন্তী, কিশোরী বয়সে দুর্বাসা মুনি থেকে দেবতাদের আহ্বান করার ক্ষমতা অর্জন করেন। ধর্মের দ্বারা যুধিষ্ঠির লাভের পর পাণ্ডু এক শক্তিমান পুত্র চাইলেন। দেবতাদের মধ্যে পবন দেব বা বায়ু দেব সবচাইতে শক্তিশালী ছিলেন। তিনি কুন্তীকে আশির্বাদ দেন যে- তার এক মহাবলশালী পুত্র হবে। ভীম নির্দ্বিধায় কুন্তীর আজ্ঞা পালনে ভোজনের থালা নিয়ে বকাসুরের সাথে দেখা করতে গেছিলন। ভীমের বীরত্ব মহিমাময়। ভীম বকাসুরের জন্য নিয়ে যাওয়া খাবার নিজেই খেতে শুরু করে আর তাই দেখে বকাসুর ভীষণ রেগে যায় এবং ভীমের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । ভীম বকাসুরকে তুলে দু হাতে আছড়াতে আছড়াতে মেরে ফেলে ।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Lochtefeld, James G. (২০০২)। The illustrated encyclopedia of Hinduism. (1st. ed. সংস্করণ)। New York: Rosen। পৃষ্ঠা 194–196। আইএসবিএন 9780823931798