বিষয়বস্তুতে চলুন

সান্ধ্য আইন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

সান্ধ্য আইন বা কারফিউ এমন এক ধরনের আইন যেখানে কোন একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বিশেষ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষিদ্ধ করা হয়।[১][২]

সান্ধ্য আইনের অধীনে ডাউনটাউন সান ফ্রান্সিসকো
২০২০ জর্জ ফ্লয়েড বিক্ষোভের সময় জর্জিয়ার আটলান্টায় সশস্ত্র পুলিশ কারফিউ বলবৎ করে।

আধুনিককালে এই আইনে কোনও একটা নির্দিষ্ট সময়ে চার জনের বেশি মানুষকে একত্রে কোনও পাবলিক প্লেসে জমায়েত হওয়া থেকে বিরত রাখার জন্য সান্ধ্য আইন বা কারফিউ জারি করা হয়। কোনও জায়গায় দাঙ্গা বা জনরোষ যখন ভয়ঙ্কর রূপে দেখা দেয়, আর পুলিশ সাধারণ জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করতে অসমর্থ হয় তখন এই আইন জারি করা হয়। সমস্যার মাত্রার ওপর সান্ধ্য আইন বা কাউফিউয়ের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়। কখনও অনির্দিষ্টকালের জন্য কারফিউ জারি করা হয়। কোনও কোনও জায়গায় রাতে কারফিউ জারি হয়, কোনও জায়গায় দিনে কয়েক ঘণ্টার জন্য জারি করা হয়। কোনও কোনও সময় অল্প সময়ের জন্য কারফিউ তুলে বা শিথিল করে দেওয়া হয়, যাতে সাধারণ মানুষ নিজের বাজার-হাটের ব্যবস্থা করে ফেলতে পারে।[৩]

এই আইন জারি হলে সবাইকে বাড়ির ভেতরে থাকার আদেশ দেওয়া হয়ে থাকে। এই কারফিউ দেওয়ার কারণ হলো, কেউ যেন ঘরের বাইরে জমায়েত হয়ে দল বেঁধে আবার কোনও অশান্তি বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ কারফিউ বা সান্ধ্য আইন রয়েছে। বাংলাদেশে বিশেষ ক্ষমতা আইন; ১৯৭৪ সালের ২৪ ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে আদেশ জারির মাধ্যমে নির্দেশ করতে পারেন যেকোনও বিশেষ লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। এই আইন লঙ্ঘন করলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানার বিধান রয়েছে।[৪]

শব্দতত্ত্ব

[সম্পাদনা]

"সান্ধ্য আইন"-এর আক্ষরিক অর্থ সন্ধ্যার সময় বা সন্ধ্যার পরে লোক চলাচলের নিয়ম কানুন।[৫] এটির ইংরেজি শব্দ curfew কার্ফ্যু, যা এসেছে ফরাসি ভাষার শব্দ couvre-feu কূভর-ফ্যু হতে, যার অর্থ অগ্নি-নির্বাপণ। মধ্যযুগে ইংরেজি শব্দ ভাণ্ডারে curfeu হিসেবে আত্তীকরণ হয় এবং আধুনিক যুগে সেটির বানান হয় curfew। উইলিয়াম দি কনকরারের মতে এই শব্দটির প্রকৃত অর্থ হল "কাঠের বাড়ি ঘরে জ্বালানো অগ্নিশিখা এবং আগুনের প্রদীপ থেকে অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের জন্য রাত আটটার ঘণ্টা বাজবার মধ্যেই সকল অগ্নিশিখা ও আগুনের প্রদীপ নিভিয়ে ফেলার নিয়ম"।[৬]

প্রকারভেদ

[সম্পাদনা]

বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন সময়ে জারি করা সান্ধ্য আইন

[সম্পাদনা]

আইসল্যান্ড

[সম্পাদনা]

যুক্তরাজ্য

[সম্পাদনা]

যুক্তরাষ্ট্র

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশ

[সম্পাদনা]

বাংলাদেশে বিশেষ ক্ষমতা আইন; ১৯৭৪ সালে ২৪ ধারা অনুযায়ী জেলা প্রশাসনের ক্ষেত্রে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং মেট্রোপলিটন এলাকার ক্ষেত্রে পুলিশ কমিশনার সরকারের নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে আদেশ জারির মাধ্যমে নির্দেশ করতে পারেন যে- কোনও বিশেষ লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবে না। এই আইন লঙ্ঘন করলে ১ বছরের কারাদণ্ড বা জরিমানার বিধান রয়েছে।[৪]

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. "curfew - definition of curfew in English from the Oxford dictionary"oxforddictionaries.com। ১৭ আগস্ট ২০১৬ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২ জুলাই ২০১৭ 
  2. "Curfew - Define Curfew at Dictionary.com"Dictionary.com 
  3. "কারফিউ বা সান্ধ্য আইন কী"বাংলা ট্রিবিউন। ২৪ জুলাই ২০২৪। ২৪ জুলাই ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০২৪ 
  4. "The Special Powers Act, 1974 ( ACT NO. XIV OF 1974 ) 24"। লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ, আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ২৪ জুলাই ২০২৪ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ২৪ জুলাই ২০২৪ 
  5. সান্ধ্য-আইন /বিশেষ্য পদ/ সন্ধ্যার পর লোকচলাচল-নিয়ামক আইন, অভিধান
  6. Bailey's Dictionary, fifth edition 1731

বহিঃসংযোগ

[সম্পাদনা]

উইকিমিডিয়া কমন্সে সান্ধ্য আইন সম্পর্কিত মিডিয়া দেখুন।